বুধবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৫

কবিতার মায়াজাল - ৭


সময়ের গল্প

সুমাইয়া তাসনিম


মাঝে মাঝে মনে হয় পরিচিত সময়গুলো হারিয়ে ফেলছি।
পাশ কাটিয়ে যাওয়া কেউ,
হুট করেই মনে হয় ওই চোখ দু’টো পরিচিত...
অনেক পায়ের ছন্দ আমার চেনা মনে হয় খুব...
চলতি পথে থমকে দাঁড়াতে হলে শহুরে পথের ব্যস্ত রঙের বহর দেখি।
অত রঙের ভীড়েও সামনে দাঁড়ানো লাইটপোস্টের ক্লান্ত হলুদ রঙ কেন আপন মনে হয় বুঝে পাইনা।
সহসাই মনে হয় সে-ই তো কেবল আলগোছে বুঝে নিয়েছে কি তীব্রভাবে প্রতিনিয়ত আমি গোপন করতে চেয়েছি নিজেকে...!
নিজের ম্লান আলোর বিমূর্ত শব্দময়তায় আড়াল করে নিয়েছে আমার সমস্ত রঙ।
কেউ কি জানতো, কত প্রচন্ড ছেলেমানুষি ব্যাকুলতা আমার ভেতরে ঘর করেছে দিনের পর দিন?
কত তীব্রভাবে বিলীন হয়ে যেতে চাইতাম অসীমে?
কোনো একদিন বিলীন হবো_ এ অনিবার্য সত্যকে কত বর্ণে চোখের পাতায় রেখেছি ভীষণ যত্নে;
অতটা কি পড়া যেতো চোখের তারার ভীরু বৃত্তের সংকোচে!


এভাবে বেঁচেছি একটা কৈশোর।
লাগামছাড়া কৌতুহলে মানুষকে বুঝেছি একেকটা নিঝুম-গহীন হৃদের মত।
কারো কারো অস্তিত্ব ছোঁয়া গেলে শুদ্ধ হওয় যায়।
আর কেউ! পার্মানেন্ট মার্কার।
হাঃ হাঃ হাঃ......
দাগ রেখে যায়।
অবাঞ্চিত সময়ের চিহ্ন রেখে যায়।
ইতস্তত দৃষ্টিতে একমুঠো অন্তঃসার শূন্যতা রেখে যায়।
এভাবে সময়ের বেলা বাড়ে।
সময়ের সাথে আমার তবু সখ্য হয়না আর কোনোদিনও।
অসমাপ্ত কথারা ছিড়ে যাওয়া মালার পাথরকণাদের মত একেকটি বিচ্ছিন্ন নক্ষত্রের মত হৃদয়ের বালুচরে সংসার পেতে থাকে।
শূন্যতায়-ব্যস্ততায়, নৈঃশব্দে-কোলাহলে জানান দেয়, “আমি আছি”।
‘আমি তোমার দেখা সেই শরতের বিকেল,
যার কাছে তুমি আকাশ দেখতে শিখেছিলে।
আমি সেই সন্ধ্যার আবীর,
যার কাছে জেনেছিলে ঝরাপাতার নিঃসীম নিঃসঙ্গতা...
আমি সেই ঘর পালানো অভিমানী মেঘ,
তোমার হাতের রেখায় মুক্তির পথ খুঁজেছিলো যে।’

ব্যস্ত কথার রাশ টেনে আচম্বিতে ব্যস্ত দুপুর থমকে দিয়ে এমন করে ফিরে আসে আমার হতচ্ছাড়া কৈশোর।।


আমি মেঘের মন বুঝিনা।
চোখের দেখায় আমি কোনো ফুলের রঙ বুঝিনা।
আমার ভেতরে কথা কয় যে,
তার কাছে আমার আজন্ম আড়াল খোঁজা।
আমাকে আমার হারানো জ্বোনাক সখার ঠিকানা পাঠাও,
আমি বিবর্ণ আঠারোর আগল খুলে অসম্পূর্ণ শেষকৃত্যের গল্প বলতে চাই।
এভাবে পুড়েছে প্রতিটি সকাল যে, সে অঙ্গার; রাত্রির সমস্ত কৃষ্ণপক্ষ ধারণ করেছে শেষপর্যন্ত।
কি নিবিড় নিপুণতায় একই খোলসে লালন করেছি বিপুল বৈপরীত্য!
অনেক ইচ্ছেদের তাড়িয়ে দিয়ে নাগরিক বোধের শাসন মাথা পেতে মেনে নিয়েছি বড় হবো বলে।
অথচ সময়ের ধাঁধা মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে চীরকাল...
সংসারের চাতুর্যকে মাধুর্য ভেবে ভ্রম হয়।
বয়েস আটকে আছে সেই শীতের রাতের ক’ফোটা শিশিরে,
অথচ আমি বড় হতে চেয়েছি...।

রবিবার, ১১ অক্টোবর, ২০১৫

অনুপ্রেরণা - ১




পুরনো সব কষ্টগুলো মনের মধ্যে রেখে দেবেন না। কিছু কষ্ট মুছে নতুন সুখ আসার জন্য জায়গা করে দিন।

অতীতের মাঝে পড়ে থাকবেন না, প্রতিটি দিন নতুন করে শুরু করুন। যেই মুহূর্তগুলো আপনি এখন পার করছেন সেগুলো মিলেই তো আপনার জীবন। অতীত বা ভবিষ্যতের দুশ্চিন্তায় অমূল্য এই বর্তমানকে নষ্ট করবেন না।

নিরাশ হবেন না। চেষ্টা চালিয়ে যান। আল্লাহকে বিশ্বাস করে থাকলে এ জীবনে আপনি যত কষ্টই ভোগ করুন না কেন, বিচারদিনে সব কষ্টের প্রতিদান পাবেন। 

জীবনে সেই মানুষগুলোকে পাবার জন্যে দুআ করুন যারা আপনাকে গতকালের আপনি থেকে উন্নত হতে অনুপ্রেরণা যোগাবে।

আপনার জীবনে আসা প্রত্যেকটি মানুষের জন্যে আল্লাহ্‌র প্রতি কৃতজ্ঞ হোন... এমনকি যারা আপনার হৃদয়ে কষ্টের দাগ রেখে গেছে তাঁদের জন্যেও। প্রতিটি অবস্থা থেকেই আপনি কিছু না কিছু শিখেছেন।

অতীতের বিষণ্ণতা অথবা আগামীদিনের শঙ্কায় আজকের শান্তিটুকু ম্লান করবেন না।

নিজেকে ভালবাসতে শিখুন। নিজের কাছে সৎ থাকুন। অন্যেরা আপনাকে সেভাবেই মূল্যায়ন করবে আপনি নিজেকে যেভাবে মূল্যায়ন করেন।

কেউ কেউ আপনার জীবনে রহমত হয়ে আসে; আর বাকিরা আসে শিক্ষা হিসেবে।

দুর্ঘটনা বলতে কিছু নেই। সবকিছুই আমাদের জীবনের জন্য শিক্ষা। প্রতিটি ঘটনার পেছনেই লুকিয়ে আছে কোন না কোন উদ্দেশ্য। 

চলে যেতে দেওয়া মানেই হার মানা নয়; এর মানে একাই সামনে এগিয়ে যেতে শেখা। 

শুক্রবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

এলোমেলো - ২


১১)
আমি তো শিখেছি ক্ষমা করতে আর আক্রোশ ধরে না রাখতে।

১২)
যদি আপনি কোন বন্ধু খুঁজে না পান কিন্তু আল্লাহর সাথে আপনার হৃদয় যুক্ত থাকে তাহলে আপনি একা নন। আর আপনি যদি আল্লাহর থেকে বিচ্ছিন্ন রয়ে যান তবে শত বন্ধু থেকেও আপনি নিঃসঙ্গ, আপনি একা।

১৩)
যারা একই কষ্টের ভেতর দিয়ে গেছে, তাদের মাঝে তো কোন ঘৃণা থাকতে পারে না।

১৪)
মুমূর্ষু মানুষগুলোর পাশে কিছু সময় কাটিয়ে দেখুন, তাদের অসহায়ত্ব দেখার পর নিজের কোন ব্যাপারে আর অভিযোগ করার ইচ্ছা জাগবে না।

১৫)
শুধু মুখে "ভালোবাসি" বলার ভেতর কোন মাহাত্ম্য নেই যদি আপনি তার জন্য কাজ না করে যান।

১৬)
পরিবর্তন ছাড়া আক্ষেপ অর্থহীন।

১৭)
মুখ তখনই খুলুন যদি আপনি যা বলবেন তা নীরবতার চেয়ে বেশি সুন্দর হয়।

১৮)
খেলা শেষে রাজা, মন্ত্রী, বোড়ে সব একই বাক্সে ফিরে যায়...

১৯)
মাঝে মাঝে সবকিছু থেকে দূরে গিয়ে কেবলই নিজের সঙ্গ উপভোগ করা প্রয়োজন।

২০)
ভালো কোনো কাজের নিয়ত করার পরের চ্যালেঞ্জ হলো কাজটি প্রথমবারের মতো শুরু করা। আর তার পরের বড় চ্যালেঞ্জটি হলো কাজটির ধারাবাহিকতা বজায় রাখা।

সোমবার, ৩১ আগস্ট, ২০১৫

টুকরো অনুবাদ #২



আমাদের কর্মের চেয়ে হুঙ্কার জোরালো,
আমাদের তলোয়ারগুলি আমাদের তুলনায় বেশি লম্বা,
এই আমাদের দুঃখজনক ব্যাপার।
সংক্ষেপে
আমরা সভ্যতার বেশ পরে রই
কিন্তু আমাদের আত্মাদের বসবাস প্রস্তরযুগে।
~ নিযার কাব্বানি

হৃদয়ের সবচেয়ে বিপজ্জনক রোগঃ প্রগাঢ় স্মৃতি।
~ নিযার কাব্বানি

গভীরভাবে ভালোবাসবেন না, যতক্ষণ না আপনি নিশ্চিত হন যে অপরপক্ষও আপনাকে একই গভীরতায় ভালোবাসে; কেননা আজকের ভালোবাসার গভীরতা আপনার আগামীকালের বেদনার গভীরতা।
~ নিযার কাব্বানি

আমরা পুরু চামড়াবিশিষ্ট শুন্য আত্মার মানুষ। পাশা, দাবা খেলে কিংবা ঘুমিয়ে আমরা দিন কাটাই - আর বলে থাকি যে আমরাই মানবজাতির মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ।
~ নিযার কাব্বানি


কাউকে হারানোর পর তো জীবন থেমে থাকে না, তা কেবল অন্যভাবে চলতে থাকে।
~ নিযার কাব্বানি


দিনগুলো কাটতে থাকবে, আর তুমি যেসব জিনিসের প্রতি আসক্ত ছিলে সেগুলো ছেড়ে দেবে, কাউকে বা বিদায় জানাবে, কোন স্বপ্ন মুছে ফেলবে, আর অবশেষে বাস্তবতাকে মেনে নেবে।
~ নিযার কাব্বানি


কেউ কেউ চাঁদের মতো, তাদের দেখতে সুন্দর লাগে, কেবল যখন তারা তোমার থেকে দূরে থাকে।
~ নিযার কাব্বানি

শেষ পর্যন্ত, ভুলে যাওয়া জীবন-বইয়ের একটি পাতা উল্টানো ছাড়া আর কিছুই নয়। এটা হয়তো সহজ ব্যাপার বলে মনে হতে পারে,  কিন্তু যতদিন না তুমি তা ছিড়ে ফেলতে পারো, ততদিন পর্যন্ত তুমি জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ে এর ওপর হোঁচট খেতে থাকবে।
~ নিযার কাব্বানি

বৃহস্পতিবার, ২১ মে, ২০১৫

টুকরো অনুবাদ #১



 "জ্ঞান অন্বেষণের প্রথম ধাপ নীরবতা, দ্বিতীয় হলো শোনা, তৃতীয় আত্মস্থ করা, চতুর্থ ধাপ চর্চা এবং সর্বশেষ হলো তা অন্যকে শিক্ষা দেওয়া।"
- সলোমন ইবন গাবিরল

"আমার বন্ধু তো সে-ই, যে গোপনে আমার ভুলগুলো শুধরে দেয়।"
- সলোমন ইবন গাবিরল

"বন্ধু তিন রকমের হয়ঃ প্রথম ধরনেরা খাদ্যের মতো, যাদের ছাড়া আপনি থাকতে পারেন না; দ্বিতীয়রা ঔষধের মতো, যাদেরকে আপনার মাঝেমধ্যে প্রয়োজন হয়; আর তৃতীয়রা আপনার কাছে ব্যাধির ন্যায়, যাদের আপনি কখনো চান না।"
- সলোমন ইবন গাবিরল

"এক জ্ঞানী ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, "সুন্দর আচরণ কী?"
তিনি জবাবে বলেছিলেন, "উদ্ধতদের সাথে ধৈর্যধারণ করা।" "
- সলোমন ইবন গাবিরল

"একজন মানুষের মন তার লেখার মাঝে লুকায়িত থাকে; সমালোচনা তা আলোয় নিয়ে আসে।"
- সলোমন ইবন গাবিরল

"জ্ঞানী মানুষের প্রশ্নের মাঝেই অর্ধেক উত্তর লুকিয়ে থাকে।"
- সলোমন ইবন গাবিরল

বৃহস্পতিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

ছড়ানো মুক্তো



[ বছর চারেক আগ থেকে আল্লাহর দয়ায় সুন্দর মনের মানুষদের সন্ধান পেতে থাকি। এ পর্যন্ত দ্বীন সম্পর্কে আমার যা শেখা তার অধিকাংশই তাদের কথা থেকে। ব্যক্তিগত প্রয়োজনেই নিজের দেখা (এবং পরে দেখবো) তাদের লেকচার আর সিরিজগুলো ক্যাটাগরি করে রাখা শুরু করেছিলাম। অন্যদের কাজে আসতে পারে এই ভেবেই তালিকাটি বানানো। ]

Category :


(i) Islam as the Truth
——————————
a) Proof that Islam is the Truth by Abdur Raheem Green (Series) : http://goo.gl/r2GU0F
b) The Argument for Islam by Hamza Tzortzis : https://www.youtube.com/watch?v=ZFviDgyxaaI
c) Islam: The Rational Choice - Hamza Tzortzis : https://www.youtube.com/watch?v=AWj17mH1ldE
d) The Quran and the Bible in the Light of Modern Science - Zakir Naik vs William Campbell : https://www.youtube.com/watch?v=y2iMrxN4NyE


(ii) Dawah to atheists / Existence of God
—————————–––––––––––––––––
a) Proof that Islam is the Truth by Abdur Raheem Green [ (i) – a ]
b) God: Delusion or Truth? – Hamza Tzortzis & Abdur Raheem Green : https://www.youtube.com/watch?v=J5eXu2yZZuk
c) The Existence of God & The Purpose of Life – Abdur Raheem Green : https://www.youtube.com/watch?v=4lBzaDeSZik
d) The Argument for Islam by Hamza Tzortzis :
https://www.youtube.com/watch?v=ZFviDgyxaaI
e) Why does God permit suffering on earth? – Abdur Raheem Green : https://www.youtube.com/watch?v=8c6O933byac
f) Can we live better lives without religion? - Hamza Tzortzis & Dr. Peter Cave : https://www.youtube.com/watch?v=dXncw5r7AKY
g) Can consciousness explain God's existence? – Hamza Tzortzis & Peter Simons : https://www.youtube.com/watch?v=77J6g04UeY0


মঙ্গলবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০১৫

কবিতার মায়াজাল - ৬

যেতে চাস, চলেই যাবি?
যেতে চাস চলেই যাবি,
কিন্তু কোথায়?
কার কাছে তুই যাবি আমার?
যেতে চাইলে যেতে পারিস,
মস্ত উঠোন এপার ওপার দেখা যায় না,
মাঠ পেরুলেই ফুরিয়ে যাবে চোখের বাঁধন,
হারিয়ে যাবে এবড়ো থেবড়ো ধুলোয় ভরা
এই নিগড়ে বাঁধা হ্রদয়।

যেতে চাস? যা- চলেই যা!
গেলেই কি আর যেতে পারবি?
পরে থাকবে বিরাট পিছন;
আঁচল ধরে পোষা কুকুর -মেচে।
সেই দিন ঠিক যেইখানে দাঁড়িয়ে থেকে আলতা মাখলি;
সেই জায়গা টা ভিতর থেকে টেনে ধরলে যেতে পারবি?
হয়তো পারিস! তার উপরে কানের পাশে ঘনো ঘনো
উষ্ণ বাতাস যে মুহূর্তে বয়ে যাবে মনে পড়বে;
মনে পড়বে, মনে পড়বে, মনের দরজায় ডাকাত পরবে।
তখন কোথায় পালিয়ে বাঁচবি?

সেইতো আবার মানুষ খোঁজা, আবার একটা হ্রদয় খোঁজা।
সব হারানোর ব্যথায়, শোকে গভীর কাওকে জরিয়ে ধরা।
বেঁচে থাকতে সবি সমান,
আমিও যা তুইও তেমন।

যেতে যেতে সড়ক মিলে-গঞ্জ থেকে বন্দরে যায়
কিন্তু তবু মুঠো খোলে না, সতর্ক চোখ বুজে না।

কি হারাবি সময়? মানুষ?
অনাগ্রতা হাস্নাহেনা............

কবিতা: যেতে চাস, চলেই যাবি
কবি: শান্তি লাহিড়ী
আবৃত্তি: মাহিদুল ইসলাম

https://www.youtube.com/watch?v=9wAucYkmWbE